*যমুনা ঘিরে সেনা সদস্যদের অবস্থান: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পতনের আশঙ্কা**

 


# **যমুনা ঘিরে সেনা সদস্যদের অবস্থান: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পতনের আশঙ্কা**  


**ঢাকা, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ | নিজস্ব প্রতিবেদক**  


বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনাকে ঘিরে সেনা সদস্যদের উপস্থিতি এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র আলোচনা চলছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতি সরকারের টিকে থাকার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় তৈরি করতে পারে।  


## **সংকটের পটভূমি**  


বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মূলত নিরপেক্ষভাবে সাধারণ নির্বাচন পরিচালনা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করছে, সরকার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে এবং আসন্ন নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।  


এই পরিস্থিতির মধ্যেই রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনাকে কেন্দ্র করে এক নতুন সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। সেনা সদস্যদের উপস্থিতি নিয়ে ব্যাপক গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে, যা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা আরও বাড়িয়ে তুলছে।  


## **সেনাবাহিনীর ভূমিকা ও বিতর্ক**  


সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। সেনাবাহিনী সরকারের কার্যক্রমের ওপর কড়া নজর রাখছে বলে গুঞ্জন ছড়ালেও, আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য আসেনি।  


বিশ্লেষকদের মতে, পরিস্থিতির অবনতি হলে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারে, যা সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলছে। যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ধারায় এগিয়েছে, কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা দেখায় যে, চরম রাজনৈতিক সংকটের সময় সেনাবাহিনীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।  


## **আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও আলোচনার উদ্যোগ**  


বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা দেশটিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে।  


রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতিনিধি, বিরোধী দলের নেতৃবৃন্দ এবং বিদেশি কূটনীতিকদের মধ্যে একাধিক বৈঠক হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো যায়নি।  


## **সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কা?**  


কিছু বিশ্লেষক মনে করছেন, যদি রাজনৈতিক অচলাবস্থা চলতে থাকে এবং সরকার বিরোধী আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠে, তবে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারে। সামরিক হস্তক্ষেপ হলে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়বে।  


## **দেশজুড়ে প্রতিক্রিয়া**  


সেনাবাহিনীর যমুনা ভবনের আশপাশে উপস্থিতির খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো পরিস্থিতি নিয়ে নতুন কৌশল নির্ধারণ করছে। বিরোধী দলগুলো সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলন জোরদার করার পরিকল্পনা করছে।  


সরকার জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে, তবে জনমনে অনিশ্চয়তা দিন দিন বাড়ছে।  


## **উপসংহার**  


যমুনা ভবনে সেনা সদস্যদের উপস্থিতি এবং প্রধান উপদেষ্টা ও সেনাপ্রধানের মধ্যে চলমান বিতর্ক বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে নতুন মোড় দিয়েছে। সরকার ও বিরোধী দলগুলোর ভবিষ্যৎ পদক্ষেপের ওপর নির্ভর করছে দেশের গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা।  


এই সংকট নিরসনে দ্রুত রাজনৈতিক সমঝোতা প্রয়োজন, অন্যথায় দেশ আরও বড় রাজনৈতিক অস্থিরতার দিকে ধাবিত হতে পারে।  

Post a Comment

Previous Post Next Post