গুলিবিদ্ধ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সারজিস আলম: হত্যা নাকি ষড়যন্ত্র?

 


### **গুলিবিদ্ধ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সারজিস আলম: হত্যা নাকি ষড়যন্ত্র?**  


**রাজশাহী, ২০২৫** – বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও এক নতুন মোড় নিল। **বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর উত্তরবঙ্গের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম** আজ রাত ৯টার দিকে অজ্ঞাত বন্দুকধারীর গুলিতে আহত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি সংকটাপন্ন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।  


### **কে এই সারজিস আলম?**  

সারজিস আলম ছিলেন ছাত্রদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় এক নেতা। তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ ছিলেন এবং দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতাসীন সরকারের নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। ছাত্রদের শিক্ষা-সুবিধা, চাকরির সুযোগ এবং মানবাধিকার রক্ষায় তার লড়াই অনেকের কাছে প্রেরণার উৎস ছিল। কিন্তু তার কর্মকাণ্ডকে সরকার **"রাষ্ট্রবিরোধী"** বলে আখ্যায়িত করে আসছিল, যার ফলে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই নজরদারিতে ছিলেন।  


### **গুলির ঘটনা: কী ঘটেছিল সেদিন রাতে?**  

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সারজিস আলম যখন রাজশাহী শহরের একটি ছোট চায়ের দোকানে বসে কিছু সহযোগীর সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখনই এক অজ্ঞাতনামা বন্দুকধারী মোটরসাইকেলে এসে তাকে লক্ষ্য করে দুটি গুলি ছোড়ে। **প্রথম গুলিটি তার কাঁধে লাগে, দ্বিতীয়টি পেট ভেদ করে চলে যায়।** আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে হামলাকারী দ্রুত পালিয়ে যায়।  


এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, **“সবকিছু এত দ্রুত ঘটল যে আমরা কিছু বুঝতে পারলাম না। গুলির শব্দ শুনে যখন আমরা এগিয়ে গেলাম, তখন দেখলাম সারজিস ভাই মাটিতে পড়ে কাতরাচ্ছেন।”**  


### **হত্যাচেষ্টা নাকি রাজনৈতিক প্রতিশোধ?**  

এই ঘটনার পর রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এনসিপি-এর কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা **রফিকুল বাসার** এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করেছেন, **"এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাচেষ্টা। সরকার বিরোধী কণ্ঠ রোধ করতেই তাকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।"**  


অন্যদিকে, সরকারপন্থী মহল থেকে বলা হচ্ছে, সারজিস আলম বিভিন্ন **"রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে"** জড়িত ছিলেন। কিছুদিন আগেই তার বিরুদ্ধে গোপনে বৈদেশিক সহায়তায় **"অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি"** করার অভিযোগ ওঠে। ফলে কিছু মহলের মতে, এটি হয়তো প্রতিপক্ষের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের ফলাফল।  


### **আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিক্রিয়া**  

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র জানিয়েছেন, **“এটি কোনো ছিনতাই বা সাধারণ অপরাধ নয়। এটি একটি পরিকল্পিত হামলা। আমরা হামলাকারীর সন্ধানে অভিযান শুরু করেছি।”**  


### **জনমতের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি**  

এই ঘটনায় সারাদেশে ছাত্রদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে **ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।**  


বিশেষজ্ঞদের মতে, **"যদি এই হামলার নেপথ্যে রাজনৈতিক কারণ থেকে থাকে, তাহলে এটি বাংলাদেশে আরও বড় রাজনৈতিক সংঘাতের ইঙ্গিত দিচ্ছে।"**  


### **শেষ কথা**  

সারজিস আলম কি আদৌ বেঁচে থাকবেন? যদি থাকেন, তবে কি তিনি আবার আগের মতো আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে পারবেন? নাকি এই হামলার মধ্য দিয়ে একটি যুগের সমাপ্তি ঘটবে? বাংলাদেশ রাজনীতির এক উত্তাল সময়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছে—এটাই এখন একমাত্র নিশ্চিত সত্য।

Post a Comment

Previous Post Next Post