‘যমুনা ঘেরাও’ হুঁশিয়ারি দিয়ে শাহবাগ ছাড়লো ছাত্রদল




‘যমুনা ঘেরাও’ হুঁশিয়ারি দিয়ে শাহবাগ ছাড়লো ছাত্রদল

🗓 প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৫, বিকেল ৬:০৮ | নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার প্রতিবাদে শাহবাগ অবরোধ শেষে যমুনা ঘেরাও কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়ে অবস্থান থেকে সরে দাঁড়িয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

রবিবার বিকেলে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ঘোষণা দেন, “যদি সাম্য হত্যার বিচার ও দোষীদের গ্রেপ্তার নিশ্চিত না হয়, তাহলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।”

এর আগে দুপুরে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এতে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। রাকিব বলেন, “সরকার ও প্রশাসনের চরম ব্যর্থতার কারণে এখনো খুনিদের ধরা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এভাবে ছাত্র খুন হয়ে গেলেও কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই।”

নিহত সাম্যের ভাই অভিযোগ করেন, “কিছু কুচক্রী মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাম্যের চরিত্র হননের অপচেষ্টা করছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার।”


স্মৃতিচারণ ও প্রতিবাদ

গত ১৩ মে রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্মমভাবে খুন হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য। তার স্মরণে এবং বিচারের দাবিতে ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে বিক্ষোভ।

রোববার বেলা ১১টায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে ছাত্রদের বিক্ষোভের পর তারা শাহবাগ থানার সামনে অবস্থান নেয়। সেখানে তারা ‘সাম্য হত্যার বিচার চাই’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খাঁন ঘোষণা দেন, “বিচারের জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

এরপর উপাচার্যের নেতৃত্বে একটি পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সচিবালয়ে বৈঠক করে। বৈঠক শেষে আইআর বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক হোসনে আরা বেগম জানান, “উপদেষ্টার কাছে দ্রুত বিচার ও মূল আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়েছে।” স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী তাদের আশ্বস্ত করেন, মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হচ্ছে এবং দ্রুতই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হবে।


শিক্ষার্থী ও সহপাঠীদের প্রতিক্রিয়া

সাম্যের সহপাঠী নাহিয়ান ইসলাম বলেন, “মূল ঘাতক এখনও ধরা পড়েনি। যাকে সবাই সন্দেহ করছে, তাকেই আগে গ্রেপ্তার করতে হবে।”

আইন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিচার দ্রুত ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার ছাত্ররা শাহবাগ থানায় গিয়ে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিল। এরপর রোববার পর্যন্ত সময় দেয় প্রশাসন। তবে আশানুরূপ অগ্রগতি না হওয়ায় আজ ফের রাস্তায় নামে ছাত্রদল।


দাবি ও আন্দোলনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

শিক্ষার্থীদের তিনটি মূল দাবি:

  1. সাম্য হত্যার প্রকৃত দায়ীদের দ্রুত গ্রেপ্তার

  2. দ্রুত বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন করে বিচার শুরু

  3. দোষীদের রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় বন্ধ

শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছে, দাবি পূরণ না হলে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবে তারা—যমুনা ঘেরাও তারই অংশ হতে পারে।



Post a Comment

Previous Post Next Post