বঙ্গবন্ধু উপাধির প্রস্তাবকারী তোফায়েল আহমেদ আর নেই — জাতি হারালো এক ইতিহাস গড়া নায়ক



**বঙ্গবন্ধু উপাধির প্রস্তাবকারী তোফায়েল আহমেদ আর নেই — জাতি হারালো এক ইতিহাস গড়া নায়ক**  

**নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৫ এপ্রিল ২০২৫ | ঢাকা**


ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।  

বাংলাদেশের রাজনীতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব তোফায়েল আহমেদ আর নেই। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।


সোমবার  দিবাগত রাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন এই বর্ষীয়ান রাজনীতিক।


**বঙ্গবন্ধু উপাধির জন্ম তাঁর হাত ধরেই**  

১৯৬৯ সালের উত্তাল গণঅভ্যুত্থানের সময় তৎকালীন ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রথম “বঙ্গবন্ধু” উপাধিতে ভূষিত করেন। সেই ঘোষণায় মুখরিত হয়েছিল পুরো জাতি, আর ইতিহাসে লেখা হয় এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়।


**রাজনীতি, ত্যাগ ও সংগ্রামের এক জীবন্ত ইতিহাস**  

তোফায়েল আহমেদ ছিলেন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। স্বাধীনতার পর তিনি জাতির পিতার ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরও তিনি আপসহীন চেতনায় দল ও আদর্শ রক্ষা করেছেন দীর্ঘ সময়।


তিনি একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন এবং বাণিজ্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন সুনামের সঙ্গে।


**শোকের ছায়া জাতীয় রাজনীতিতে**  

তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুতে শোকাহত দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক সংগঠন তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক শোকবার্তায় বলেন,  

*"তোফায়েল আহমেদ ছিলেন একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক। তাঁর অবদান জাতি চিরকাল শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।"*


**জানাজা ও দাফন**  

 মরদেহ নেওয়া হবে ভোলায়, নিজ এলাকার জনগণের শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। সেখানেই পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।


**শেষ কথা:**  

তোফায়েল আহমেদ শুধু একজন রাজনীতিবিদ নন, তিনি ছিলেন চলমান ইতিহাসের এক জীবন্ত দলিল। তাঁর মৃত্যুতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়।


আল্লাহ তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুন—এই প্রার্থনায় আজ কাঁদছে বাংলার কোটি মানুষ।


--

Post a Comment

Previous Post Next Post