ইরানে প্রকাশ্যে ফাঁসি: মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে যুবকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর



**ইরানে প্রকাশ্যে ফাঁসি: মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে যুবকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর**  

**ডিএম নিউজ ডেস্ক | ১ মে ২০২৫**


গাজা সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যকার টানাপোড়েন আরও চরম আকার ধারণ করেছে। এই উত্তেজনার আবহে ইরান সরকার মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে মোসেন ল্যাংরানশিন নামের এক যুবককে প্রকাশ্যে ফাঁসি দিয়েছে।  


ইরানের বিচার বিভাগ জানিয়েছে, মোসেন গত দুই বছর ধরে ইরানের পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও সামরিক স্থাপনাসমূহের সংবেদনশীল তথ্য গোপনে ইসরাইলের কাছে পাচার করছিলেন। আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, ২০২২ সালে রেভলিউশনারি গার্ড কর্নেল সাইদ খোদাইয়ের হত্যাকাণ্ড এবং ইসফাহানে একটি প্রতিরক্ষা স্থাপনায় হামলার সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন।


বিচার বিভাগ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে মোসেন নিজের দোষ স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়ার পরই ইরানের আইনে গুপ্তচরবৃত্তির সর্বোচ্চ সাজা—মৃত্যুদণ্ড—দেওয়া হয় এবং তা প্রকাশ্যে কার্যকর করা হয়।


**পরমাণু আলোচনার ছায়ায় ফাঁসি**  

এই ফাঁসির ঘটনা এমন এক সময় ঘটলো, যখন ইরান ও আমেরিকার মধ্যে নতুন পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে। ওমানের মধ্যস্থতায় ইরান-আমেরিকার তৃতীয় দফার বৈঠক ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। তবে ইসরাইল এই আলোচনার কঠোর বিরোধিতা করছে।


ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু একাধিকবার বলেছেন, “ইরানের পরমাণু সক্ষমতা ধ্বংস না করা পর্যন্ত শান্তি সম্ভব নয়।” ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাল্টা অভিযোগ করেন, “তেহরান-ওয়াশিংটনের আলোচনায় বাধা সৃষ্টি করতে ইসরাইল বিভিন্ন গোপন অপারেশনে লিপ্ত।”


**ছায়াযুদ্ধের ধারাবাহিকতা**  

ইরান দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি থামাতে মোসাদ একাধিক বিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে এবং সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। এমনকি ইরানের অভ্যন্তরে মোসাদের নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে আছে বলেও দাবি করে তারা। এ ধরনের গুপ্তচরবৃত্তির ঘটনায় অতীতেও একাধিক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে তেহরান।


এই প্রেক্ষাপটে মোসেন ল্যাংরানশিনের ফাঁসি শুধু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং ইরান-ইসরাইলের চলমান ছায়াযুদ্ধেরই একটি নাটকীয় অধ্যায়।


---


Post a Comment

Previous Post Next Post